নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও রাজশাহী জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিল চলন বিল। প্রায় ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জলাভূমি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেই নয়, জীববৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্যও ব্যাপকভাবে পরিচিত।
বর্ষাকালে চলন বিল পরিণত হয় বিশাল জলরাশির সমুদ্রে। তখন নৌকায় চড়ে বিল ভ্রমণ করতে প্রতিদিন শত শত পর্যটক ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পানির বুকে ভেসে থাকা সবুজ শাপলা, পদ্ম আর নানা জলজ উদ্ভিদ মুগ্ধ করে ভ্রমণপিপাসুদের। শীতকালে এখানে অতিথি পাখির সমাগম হয়, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য অনন্য আকর্ষণ।
প্রাণিজগতেও সমৃদ্ধ এই বিল। অসংখ্য প্রজাতির দেশীয় মাছের প্রজননক্ষেত্র হওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি। অনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে মাছ শিকার ও বিক্রির মাধ্যমে। পাশাপাশি কৃষকরা বিলে শুকনো মৌসুমে ধানসহ নানা ফসল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয়রা জানান, পর্যটনবান্ধব উদ্যোগ ও সঠিক সংরক্ষণের মাধ্যমে চলন বিল হতে পারে দেশের অন্যতম বড় ইকোট্যুরিজম সেন্টার। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ এ অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
পর্যটক শাহীন আহমেদ বলেন, “চলন বিল যেন এক খণ্ড স্বপ্নরাজ্য। নৌকায় ঘুরে শাপলা-পদ্ম দেখা কিংবা পাখির ঝাঁক উড়ে যাওয়া—সবকিছুই অনন্য অভিজ্ঞতা।”
প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত চলন বিল শুধু সৌন্দর্য নয়, এটি হয়ে উঠছে মানুষের জীবিকা, সংস্কৃতি ও বিনোদনের মিলনস্থল। সঠিক পরিকল্পনায় সংরক্ষণ করলে চলন বিল হতে পারে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন ও পর্যটন খাতের অন্যতম রত্ন।