নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার টিকাপাড়া বাসার রোডে চাঁদা আদায়ের জেরে এক ভাড়াটিয়া পরিবার ও বাড়ির মালিকের ছেলের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা, লুটপাট, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের চেষ্টা ও মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দ্বীপ, তারেক, সম্রাট, বিশাল, আলী, বোবাই, পাভেল, ঋত্বিক ও সাগরসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় আসামি দ্বীপকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আলিফ জানান, আসামি তারেক ও সম্রাট দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। বিষয়টি স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, শুক্রবার গভীর রাতে বাসার মেইন গেট খোলা পেয়ে নিচতলার ভাড়াটিয়া বিশালের সহযোগিতায় বাকি ৮ জন তিনতলার ভাড়াটিয়া ফুলজান বেগমের বাসায় হামলা চালায়।
আলিফ জানান, হামলাকারীরা প্রবেশ করেই রুমি খাতুন আশার গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। তারেক আশার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। পরে তিনি, তার বন্ধু আব্দুল্লাহ, হাসনাত ও বক্কর ঘটনাস্থলে গেলে তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে জিম্মি করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা তারেক তার কপালে পিস্তল ধরে এবং সম্রাট গলায় ছুরি ঠেকিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের জামা খুলিয়ে ভাড়াটিয়া রিতুর সঙ্গে একই স্থানে ভিডিও ধারণ করে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেয়।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা তার দুটি মোবাইল, ‘নগদ’ অ্যাপ থেকে ৫ হাজার টাকা, পকেটে থাকা ১৬ হাজার ৩০০ টাকা, মানিব্যাগে থাকা এটিএম কার্ড ও ব্যাংকের চেক ছিনিয়ে নেয়। তার বন্ধুর কাছে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট থেকে আরও ৩ হাজার টাকা নিয়ে নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভাড়াটিয়া আশা জানান, রাতেই কয়েকজন দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে ঘরে ঢুকে সম্রাট তাকে শ্লীলতাহানি করে। লাথি মারলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।
এ সময় ফুলজানের ছোট মেয়ে ঋতু বলেন, তিনি মায়ের পাশে ছিলেন। একপর্যায়ে তারেক তাকে পাশের রুমে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। হাত ধরে টানাটানি করলে মা বাধা দিতে গেলে সম্রাট তার মায়ের বুকে লাথি মারে এবং ছুরি গলায় ধরে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর তাকে পাশের রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে তার জামা-পায়জামা ছিঁড়ে যায় এবং মুখে আঘাত লাগে।
আলিফ আরও জানান, তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখলে তার বড় ভাই অমিত ৫০ হাজার টাকা আসামিদের হাতে দিলে তারা তাকে ছেড়ে দেয়। সকালে স্থানীয়রা জড়ো হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং পালানোর সময় তার লিফান KPR মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।