নিজস্ব প্রতিবেদক
র্যাব-১২, সদর কোম্পানি, সিরাজগঞ্জ এবং র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এর যৌথ অভিযানে বহুল আলোচিত সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাধীন রেস্টুরেন্টে কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী
গ্রেফতার।
উল্লিখিত মামলার এজাহারের বর্ণনা মতে, ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তার (১৪) সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানাধীন কর্ণসুতী দাখিল মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ৭ম শ্রেণীর একজন ছাত্রী। গত ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখ সকাল ১০.০০ ঘটিকায় ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তার (১৪) কর্ণসুতী দাখিল মাদ্রাসায় যায়। একই তারিখ বিকাল ১৬.০০ ঘটিকায় মাদ্রাসা ছুটি হলেও ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তার (১৪) বাড়িতে ফিরে না আসলে তার পরিবার কর্নসুতী দাখিল মাদ্রাসা সহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়ী ও আশেপাশে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। খোঁজাখুজি করার সময় একই তারিখ বিকেল ১৭.৪৫ ঘটিকায় অজ্ঞাত একজন ব্যক্তি ভিকটিমের পরিবারকে ফোন দিয়ে জানান যে, খাদিজা নামে একটি মেয়ে সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে অচেতন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের পরিবার সন্ধ্যা ১৯.০০ ঘটিকায় সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌছে ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তার (১৪) এর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখতে পেয়ে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইং ২০/১০/২০২৫ তারিখ রাত্রী ০০.৩০ ঘটিকায় ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তার (১৪) এর জ্ঞান ফিরলে সে জানায় যে, ইং ১৯/১০/২০২৫ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০.৩০ ঘটিকার সময় মাদ্রাসা হতে কলম কেনার জন্য সে কামারখন্দ থানাধীন কর্নসুতী গ্রামস্থ তালুকদারবাড়ী পারিবারিক কবরস্থানের পার্শ্বে পাঁকা রাস্তা দিয়ে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় সিএনজি নিয়ে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীগণ ভিকটিমের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক তাকে সিএনজিতে তুলে নিয়ে দ্রুত গতিতে জামতৈল রেলগেটের দিকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে একই তারিখ সকাল আনুমানিক ১১.০০ ঘটিকার সময় কামারখন্দ থানাধীন উপজেলা সেন্ট্রাল পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে ডেরা ফাস্ট ফুড এ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর ভিতরে নিয়ে রেস্টুরেন্টের পূর্ব সাইডে ডান পার্শ্বের কেবিনে বসার লম্বা সোফার উপর শোয়াইয়া মুখ চেপে ধরে মূল আসামী মোঃ নাইম হোসেন ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তার (১৪) কে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন। ঐ সময় তার সহযোগী অন্যান্য আসামীগণ রেস্টুরেন্টের ভিতরের গেটে পাহারা দেয় এবং ভিকটিম মোছাঃ খাদিজা আক্তারের কান্নাকাটি বাহির থেকে কেউ যেন শুনতে না পারে সে জন্য জোরে জোরে উচ্চস্বরে ডেকসেটে গান বাজায়। প্রধান আসামী মোঃ নাইম হোসেন এর দ্বারা ধর্ষণের ফলে ভিকটিমের যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত হতে থাকে। রক্তপাত দেখে ভিকটিম রেস্টুরেন্ট এর ভিতরেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ভিকটিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রধান আসামী নাইম অন্যান্য সহযোগী আসামীদের সহায়তায় তাকে সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে ভর্তি করে রেখে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানায় একটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করে যার মামলা নং-০৯, তারিখ- ২০/১০/২৫ খ্রি., ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী-০৩) এর ৭/৩০/৯(১)। উক্ত ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত প্রধান আসামী মোঃ নাইম হোসেন পলাতক ছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় অধিনায়ক র্যাব-১২, সিরাজগঞ্জ মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় গত ২২ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিঃ, ভোর ০৪.৩০ ঘটিকায় র্যাব-১২, সদর কোম্পানি এবং র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা এর একটি চৌকস যৌথ আভিযানিক দল “কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন জিয়ারকান্দি এলাকায়” অভিযান পরিচালনা করে অত্র মামলার প্রধান আসামী অভিযুক্ত মোঃ নাইম হোসেন (২০), পিতা- মোঃ রহমত আলী, সাং- চর কামারখন্দ থানা- কামারখন্দ, জেলা- সিরাজগঞ্জ ‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
উপ- অধিনায়ক মোঃ আহসান হাবিব,বলেন গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।